সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২১ অপরাহ্ন

Headline :
সারাদেশে সকল মসজিদে একই সময় জুমআর নামাজ আদায় করার নিদের্শনা যারা এস এস সি পরীক্ষা ২০২৫ এ অংশ নিতে যাচ্ছো তাদের জন্য দরকারি পরামর্শ অবিসংবাদিত মহান শিক্ষক নেতা জনাব এডভোকেট অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া স্যার হঠাৎ শারীরিক ভাবে অসুস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সনদ উত্তোলনের প্রক্রিয়া ৩ এপ্রিলসহ সরকারি ছুটি টানা ৯ দিন ইতিকাফের পরিচয় ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ সুদী ব্যাংকে চাকরি করার বিধান চট্টগ্রাম স্টাডি সেন্টারে বিএমএড ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম সম্পন্ন রাজারহাটে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের আবশ্যকীয় গুণাবলী

নাজমুদ্দীন মোঃ তাওহীদ। / ১৪৫ Time View
Update : সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২১ অপরাহ্ন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের আবশ্যকীয় গুণাবলী:
১. নেতৃত্বের চেয়ার আল্লাহর নিয়ামত অথবা পরীক্ষা মনে করে শোকর আদায় করা এবং অন্তরে পরকালিন জবাবদিহিতার ভয় রাখা।
২. প্রাতিষ্ঠানিক কাজকে দ্বীনের কাজ মনে করা এবং খেদমতের বিশাল সুযোগ কাজে লাগানো।
৩. নিজেকে নির্লোভ এবং পরোপকারী হিসেবে উপস্থাপন করা।
৪. প্রতিষ্ঠানকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে না করা।
৫. আত্মীয়তা, প্রতিশোধ পরায়ণ এবং আঞ্চলিকতার জাহেলিয়াত থেকে মুক্ত থাকা।
৬. প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী এবং জিনিসপত্রকে আমানত মনে করা।
৭. নিজের পাওনা প্রাপ্তির সাথে সাথে অধীনস্থদের পাওনা প্রাপ্তির প্রতি বিশেষ নজর দেয়া, তাদের যৌক্তিক দাবীগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে দর কষাকষি করে নিজ দায়িত্বে আদায় করে দেয়া।
৮. কর্তৃপক্ষের সাথে কোন বিষয়ে বিতর্কে জড়ানো যাবে না। পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে, সুন্দর ভাষায় সকল দাবী আদায় করার চেষ্টা করা।
৯. কোন কাজ আগামী দিনের জন্য না রেখে যথাসম্ভব আজকেই শেষ করার চেষ্টা করা।
১০. রাজনীতি, ব্যবসা, প্রাইভেট-টিউশনী, ওয়াজ-মাহফিল এবং বোর্ডের কাগজ নিয়ে ব্যস্ত না থেকে প্রতিষ্ঠানে বেশী সময় দেয়া।
১১. অহেতুক উপজেলা, জেলা শিক্ষা অফিস এবং বোর্ডে দৌঁড়াদৌঁড়ি করলে ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়ে যায়।
১২. এরকম হলে আমি এই প্রতিষ্ঠানে থাকবো না, আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না, আমি বিকল্প চিন্তা করব ইত্যাদি মন্তব্য কিছুতেই করা যাবেনা।
১৩. শিক্ষক এবং স্টাফদের সকল শূণ্যপদ দ্রুতই পূরণ করা (একজন স্টাফ বিদায় নেয়ার আগেই একাধিক বিকল্প লোকের ব্যবস্থা রাখা)।
১৪. পুরাতন যেকোন শিক্ষক অথবা স্টাফকে যেকোন মূল্যে ধরে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করা।
১৫. অর্থনৈতিক এবং নারী গঠিত সকল সন্দেহযুক্ত কর্মকাণ্ড থেকে নিজকে দূরে রাখা (ছাত্রী এবং মহিলা শিক্ষিকাদের সাথে কম ঘেঁষা)।
১৬. ধমক নয়; সুন্দর আচরন এবং সহযোগী মনোভাব দিয়ে কাজ আদায় করা।
★ “সকল কাজ আমি করি, বাকীরা সবাই মরা কলা গাছ” এমন মানসিকতা পরিহার করতে হবে,
বরং সকল কৃতিত্ব সাধারণ শিক্ষকদের, প্রতিষ্ঠান প্রধান অগ্রজ মাত্র- এমন মানসিকতা থাকা চাই৷
১৭. অনুপস্থিতি এবং দেরীতে আসার জন্য আগেই ধমক না দিয়ে- সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করুন।
১৮. মাঝে মাঝে শিক্ষকদের বাসায় যাওয়া, চা-নাস্তা খাওয়া, সময় দেয়া এবং তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অবস্থা জানা।
১৯. অধীনস্থদেরকেও মাঝে মাঝে আপনার বাসায় নিয়ে যাবেন, একসাথে চা-নাস্তা খাবেন।
২০. কেন্দ্রীয় এবং বৃত্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানকেই মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হয়।
২১. সকল কাজ ভাগ করে দেয়ার পর প্রত্যক্ষ তদারকি করা। কঠিন কাজটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের ভাগে রাখা।
২২. প্রতিষ্ঠানমুখী এবং ছাত্রবান্ধব শিক্ষকদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
২৩. প্রতিষ্ঠানমুখী শিক্ষকদের দাবীগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আদায় করার পাশাপাশি তাদের আয়ের বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া (কোচিং, প্রাইভেট, ইমামতি, জুমআ, লজিং ইত্যাদি)।
২৪. তেলবাজ-তোষামোধকারী শিক্ষক-স্টাপ থেকে সর্বদা সতর্ক থাকা। তাদের দ্বারা উপকারের চেয়ে অপকার বেশী হয়।
২৫. অনুগত এবং সরল প্রকৃতির শিক্ষকদের প্রতি কঠোরতা, আর দুষ্কৃতিকারী এবং আইন অমান্যকারীদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন না করা।
২৬. দায়িত্বশীল হিসেবে আপনার বেইনসাফি, প্রতিশোধপরায়ন এবং জুলুমবাজ মানসিকতা থাকলে- আপনার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে হিমালয় পর্বত সমান জুলুম এবং মানসিক অশান্তি সৃষ্টি হয়ে যাবে, আর আপনার পরকাল বরবাদ হয়ে যাবে।
২৭. একাকি চা-নাস্তা গ্রহণ না করে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন শিক্ষককে সাথে নিয়ে নাস্তা গ্রহণ করা।
২৮. ঈদ, রমজানসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস এবং অনুষ্ঠানে মোবাইলে ম্যাসেজ অথবা কল দিয়ে অধীনস্থদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা।
২৯. শুদ্ধ ভাষা, ভদ্র আচরন এবং মার্জিত পোশাক ব্যক্তিত্ব বজায় রাখার অন্যতম হাতিয়ার।
৩০. কোন বিষয়ে তাড়াহুড়া করে সিদ্ধান্ত না নেয়া অথবা মন্তব্য না করা।
৩১. যেকোন ছোটখাটো সমস্যার কথা সাথে সাথে নোট করে নিবেন। তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য কোন বিষয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পাকাবেন না।
৩২. প্রতিষ্ঠান প্রধানের ব্যাপারে এমন ধারণা যেন না আসে-
* প্রতিষ্ঠান প্রধান শুধু আদেশ করেন; নিজে কাজ করেন না,
* প্রতিষ্ঠান প্রধান শুধু অধীনস্থদের দিয়ে কাজ করান; কিন্তু অধীনস্থদের অধিকারের ব্যাপারে হাইকোর্ট দেখান,
* প্রতিষ্ঠান প্রধান আইন তৈরী করেন- কিন্তু আইন মানেন না!
৩৩. মিষ্টভাষী, সদালাপী, আমানতদারী, স্থিতিশীল, সময়ানুবর্তিতা, মেজাজের ভারসাম্য, সিদ্ধান্ত গ্রহণের যোগ্যতা, ইনসাফ, ইহসান, প্রজ্ঞা এবং পরিশ্রমপ্রিয়তা একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে শ্রেষ্ঠ অভিভাবকের গুণে গুণান্বিত করতে পারে।
৩৪. একদিন এই প্রতিষ্ঠানে আপনি থাকবেন না- কিন্তু আপনার অধীনস্থদের সাথে দেখা হবে, কথা হবে- এমন আচরন করুন, যেন অবসর পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়।

সংগৃহীত

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


error: Content is protected !!
error: Content is protected !!