বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি নীতিমালা

Reporter Name / ১৩২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিতে নীতিমালা প্রকাশ, প্রতি শাখায় ৫৫, জেনে নিন সব তথ্য

দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে। স্কুলের কোনো শ্রেণির কোনো শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। আর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স ৬ বছরের বেশি হতে হবে।

এসব নিয়ম রেখে দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নতুন নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এ নীতিমালা। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে এ নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীর বয়স কত হতে হবে
‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ৬ বছরের বেশি হতে হবে। পরবর্তী শ্রেণিতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। ভর্তির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় নির্ধারণ করবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। যেমন: ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্ম তারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত।

শিক্ষাবর্ষ
নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অনলাইন আবেদন ও লটারির তারিখ নির্ধারণ করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ বিবেচিত হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থী সংখ্যা হবে ৫৫ জন।

সংরক্ষিত কোটা, পোষ্য কোটা ও যমজ ভর্তি
*ঢাকা মহানগরের সরকারি বিদ্যালয়সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ঢাকা মহানগরের সব সরকারি বিদ্যালয়ের আওতাধীন ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করবে।

*মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।

*ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

*বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকার শর্তে ভর্তির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। কোনো আসন শূন্য থাকলে তা অপেক্ষমান তালিকা থেকে পূরণ করতে হবে।

*মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষ্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হবে।

*কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোন যদি আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকে, সেসব সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোনের জন্য ৩ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তবে এ সুবিধা কোনো দম্পতির সর্বোচ্চ ২ সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে ভর্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ভর্তির তারিখ ও ফি
কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের তারিখ ও সময় এবং আবেদন ফি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নির্ধারণ করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।

স্কুল চয়েজ বা পছন্দক্রম যেভাবে
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে ২টি পছন্দক্রম (২টি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে গণ্য হবে। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে কোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ডিজিটাল লটারি ও ফলাফল যেভাবে
ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান আবেদন ও ডিজিটাল লটারির যাবতীয় তথ্য ঢাকা মহানগরের ভর্তি কমিটির কাছে জমা দেবে। এরপর মাউশির তত্ত্বাবধানে ঢাকা মহানগরের ভর্তি কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে লটারির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

সারা দেশের ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদনের ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ নীতিমালা অনুযায়ী শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত প্রথম লটারির সমসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা নির্বাচন করতে হবে। পরে প্রয়োজন হলে লটারির মাধ্যমে দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।

এসব নীতিমালা প্রয়োগকালীন কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে, তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক নিষ্পত্তি করতে হবে।

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


error: Content is protected !!
error: Content is protected !!